
নামাজে জামা অথবা প্যান্ট পাজামা গুটিয়ে (ভাঁজ করে) নামাজ পড়া মাকরুহে তাহরিমি মানে হারামের কাছাকাছি, এই রকম হলে নামাজ পূণরায় পড়া ওয়াজিব।
بَابُ الْسُّجُوْدِ وَفَضْلِه
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْظُمٍ عَلَى الْجَبْهَةِ وَالْيَدَيْنِ وَالرُّكْبَتَيْنِ وَأَطْرَافِ الْقَدَمَيْنِ وَلَا نَكْفِتَ الثِّيَاب وَلَا الشّعْر»
ইবনু ’আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে শরীরের সাতটি হাড়; যথা কপাল, দু’ হাত, দু’ হাঁটু, দু’ পায়ের পাতার অগ্রভাগের সাহায্যে সিজদা্ (সিজদা/সেজদা) করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর কাপড়, দাড়ি ও চুল একত্রিত করে গুটিয়ে রাখতে নিষেধ করা হয়েছে।
হাদিস: সহীহ : বুখারী ৮১২, মুসলিম ৪৯০, নাসায়ী ১০৯৭, দারেমী ১৩৫৮, ইরওয়া ৩১০, সহীহ আল জামি‘ ১৩৬৯।
এবার অনেকে বলবে টাখনুর নিচে কাপড় রাখতে হয় না।তাহলে আমি বলবো ছোট করে টাখনুর উপর পর্যন্ত প্যান্ট পাজামা তৈরি করবেন।
আপনার পর্যবেক্ষণ সঠিক যে মাকরূহে তাহরিমি ফিকহের দৃষ্টিতে হারামের কাছাকাছি একটি পর্যায়, এবং এর ক্ষেত্রে কাজটি পুনরায় করার প্রয়োজন হতে পারে। তবে, “জামা বা পাজামা গুটিয়ে নামাজ পড়া” বিষয়ে ফিকহে মতপার্থক্য রয়েছে, এবং এটি নির্ভর করে বিষয়টির প্রেক্ষাপট এবং কারণের ওপর।
মাকরূহে তাহরিমি সম্পর্কে:
হানাফি মাযহাব অনুযায়ী, মাকরূহে তাহরিমি এমন একটি কাজ যা কুরআন বা সুন্নাহ থেকে স্পষ্টত নিষিদ্ধ নয়, তবে তা হারামের কাছাকাছি। এটি ইচ্ছাকৃতভাবে করলে পাপ হয়, এবং সংশ্লিষ্ট ইবাদত পুনরায় আদায় করা উচিত।
জামা বা পাজামা গুটিয়ে নামাজের ক্ষেত্রে প্রেক্ষাপট:
- হাদিস থেকে নির্দেশনা:
সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“আমি নামাজে চুল ও কাপড় গুটানোর (বা বেঁধে রাখার) বিষয়টি নিষিদ্ধ করেছি।”
(সহীহ মুসলিম: ৪৯২)
এ নির্দেশনাটি এমন অবস্থার জন্য যেখানে কাপড় বা চুল গুটানোর মাধ্যমে অহংকার প্রদর্শিত হয়, অথবা তা নামাজের জন্য অপ্রয়োজনীয় হয়।
- ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত:
ইচ্ছাকৃতভাবে কাপড় গুটিয়ে নামাজ পড়া: যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কাপড় গুটিয়ে নামাজ পড়ে এবং এটি অহংকার বা শৈথিল্যের কারণে হয়, তাহলে তা মাকরূহে তাহরিমি। এ ক্ষেত্রে নামাজ পুনরায় আদায় করা উচিত।
অনিচ্ছাকৃত বা প্রয়োজনের কারণে: যদি কাপড় ময়লা হওয়া বা আরামের জন্য গুটানো হয়, তবে তা মাকরূহ নয় এবং নামাজ শুদ্ধ হবে।
- ফিকহি মতামত:
হানাফি মাযহাবে এটি মাকরূহে তাহরিমি ধরা হয় যদি অযথা বা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়। অন্য মাযহাবে এটিকে মাকরূহে তানযিহি (যা অপছন্দনীয় কিন্তু নামাজ শুদ্ধ) হিসেবে দেখা হয়।
আপনার কথা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত:
আপনি যেহেতু মাকরূহে তাহরিমির পক্ষে জানেন এবং সতর্ক হতে চান, আপনার জন্য উত্তম হলো:
জামা বা পাজামা গুটিয়ে নামাজ না পড়া।
যদি কখনো এমন হয় যে গুটিয়ে নামাজ পড়া হয়েছে, এবং তা অযথা হয়েছে, তবে নামাজ পুনরায় পড়ে নেওয়া ভালো।
প্রয়োজনীয় কারণে গুটানো থাকলে, আল্লাহর রহমতের ওপর ভরসা রাখুন, এবং নামাজ শুদ্ধ হবে।
উপসংহার:
সতর্কতার জন্য আপনি মাকরূহে তাহরিমি এড়ানোর চেষ্টা করুন। নামাজ আল্লাহর সামনে সর্বোচ্চ মনোযোগ ও আদবের সঙ্গে আদায় করাই আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত।